এই মুহূর্তে রাজ্য

ভোটের কালি সম্পর্কে কিছু কথা

কলকাতা-পিনাকী চৌধুরী- ভোটের কালি সম্পর্কে :দিনক্ষণ ঘোষণার অপেক্ষায় ! তবে দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গেছে ! ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নজরকাড়া প্রচারে ঝড় উঠেছে ! তবে ভোটদাতাদের তর্জনী তে এক বিশেষ ধরনের কালির দাগ দেওয়া হয়, যাতে বোঝা যায় তিনি ভোটদান করেছেন । প্রসঙ্গত, এই বিশেষ ধরনের কালি কিন্তু খোলা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না, এমনকি জেরক্স অথবা ফাউন্টেন পেনের কালির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এই ভোটের কালি ! রীতিমতো বরাত দিয়ে এই কালি প্রস্তুত করা হয়। মেরেকেটে দু’একটি সংস্থা এই ভোটের কালি তৈরি করে । তারমধ্যে অন্যতম মাইসোর পেইন্টস অ্যান্ড ভার্নিস লিমিটেড সংস্থাটি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন এই সংস্থা। ১৯৩৭ সালে মহীশূরের রাজপরিবারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় সংস্থাটি। মহীশূরের রাজা শিল্পোদ্যোগী ছিলেন। তদানীন্তন সময়ে এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সংস্থাটি, নাম ছিল মাইসোর ল্যাক ফ্যাক্টরি। প্রথম প্রথম মোম প্রস্তুত করা হত। সেই মোম প্রস্তুতের ধারা আজও বজায় রয়েছে। অতীতে যখন ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ করা হত, তখন ব্যালট বাক্স সিল করা হত এই মোম দিয়ে। ১৯৪৭ সালে কর্ণাটক সরকার সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে। শুরু হয় রঙ প্রস্তুত। কিন্তু প্রথম কবে চালু হয়েছিল সেই ভোটের কালি দেওয়ার প্রক্রিয়া ? ১৯৬২ সালে দেশের তৃতীয় সাধারণ নির্বাচনে প্রথম ভোটের কালি ভোটারদের তর্জনী তে দেওয়া হয়েছিল। আক্ষরিক অর্থেই যেন এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছিল ! তবে শুধুমাত্র ভারতেই নয়, বরং বিশ্বের অনেক দেশেই, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ নেপাল প্রভৃতি দেশেও এই ভোটের কালি অত্যন্ত জনপ্রিয় ! আপনি জানলে অবাক হবেন যে, আফগানিস্তানে ভোটারদের তর্জনী তে ভোটের কালি দেওয়া হয় ফাউন্টেন পেন দিয়ে। কিন্তু কি রয়েছে এই বিশেষ ধরনের কালিতে ? সেটা কিন্তু আজও চূড়ান্ত গোপনীয়তায় রয়েছে। ১৯৬২ সালে ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরি একটি সিক্রেট ফর্মুলা মহীশূরের ওই কালি প্রস্তুতকারক সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে। চূড়ান্ত গোপনীয়তায় আজও সেই ভোটের কালি প্রস্তুত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *