কলকাতা-হৃদয়পুর-সৃঞ্চিণী পোদ্দার রিপোর্ট – গল্প হলেও সত্যি। রূপান্তরকামী এক মহিলাকে সহধর্মিনী হিসাবে গ্রহণ করলেন এক ব্যবসায়ী। এই নজির এই শহরেই রয়েছে ৷ স্রাচি দাস মিত্র আর ইন্দ্রজিৎ মিত্র হলেন এই হৃদয়পুরের বুকে দৃষ্টান্ত ৷ গত এক বছর আগে তাদের দীর্ঘদিনের প্রেম পরিণতি পেয়েছিল বিয়ের পিঁড়িতে ৷ চিকিৎসা শাস্ত্রের সাহায্য নিয়েছিলেন স্রাচি ৷ নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করেও পুরুষ থেকে আজ নারী হয়ে ওঠার লড়াইয়ে সে জয়ী। পরিবারের বড় বউ। ইন্দ্রজিতের যোগ্য জীবন সঙ্গিনী। আবার সভ্য সমাজের অন্যতম এক নজির। পেশায় একজন মেকআপ আর্টিস্ট। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে আলাদা চলনবলন সবটাই ছিল মেয়েদের মত। পুরুষের শরীর নিয়ে জন্মগ্রহণ করলেও আকাঙ্ক্ষা ছিল একজন নারী হয়ে ওঠার। প্রথম জীবনে বিয়ে করার পরেও তার এই রূপান্তরকামী হয়ে ওঠার গল্পে জেরে ভেঙে গিয়েছিল সংসার। স্রাচির জীবন থেকে একে একে সরে যেতে থাকে তার পরিজনেরা। পাশে বন্ধু হিসেবে হাত বাড়ায় তার স্বামী ইন্দ্রজিৎ মিত্র। একসাথে শুরু করে সংসার জীবন।
স্রাচির অতীতের কাহিনি শুনে প্রথমেই আপত্তি জানায় ইন্দ্রজিতের পরিবার ৷ সমাজ কী বলবে, এই ভাবনায় তখন তাঁরা দোটানায় ৷ কিন্তু ইন্দ্র এবং স্রাচি কিন্তু নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন ৷ আজ থেকে এক বছর আগে ৬ই মার্চ বিয়ে সারলেন তাঁরা ৷ আর তাঁদের সবথেকে বড় পাওয়া বিয়ের সময় দুই পরিবারের সমস্ত সদস্যই হাজির ছিলেন ৷ এক্কেবারে সনাতনী রীতি মেনে হয়ে গেল তাঁদের বিয়ে ৷ আর প্রথম বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে আবারো দুই পরিবারের সদস্যরা পরিজনেরা একেবারে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। নাচে গানে ভরে ওঠে, গোটা সন্ধ্যানুষ্ঠান। এতে খুশি দম্পতিও।
কেক কেটে মালা বদল করে সিঁদুর দানের মধ্য দিয়ে এই দিনটি উদযাপন করে স্রাচি এবং ইন্দ্রজিৎ। পরিবারের সদস্যদের সাথে নানা রকম খাওয়া দাওয়া আনন্দ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করে প্রথম বর্ষ বিবাহ বার্ষিকী।