এই মুহূর্তে রাজ্য

বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে মেডিকা হাসপাতাল এর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট চ্যাম্পিয়ন মিট

কলকাতা- এই বছর বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষ্যে অন্যতম প্রধান বেসরকারি হসপিটাল মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটাল তাদের মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটালে আয়োজন করেছিল কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট চ্যাম্পিয়ন্স মিট। এই আয়োজনের অন্যতম উপলক্ষ্য ছিল কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল বিষয় নিয়ে তুলে ধরার মূল আলোচনার সভা। উপস্থিত ছিলেন (প্রফেসর) ডঃ দিলীপ কুমার পাহাড়ি, নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, ডিরেক্টর এবং সিনিয়র কনসালটেন্ট, নেফ্রোলজি, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল। এছাড়া ছিলেন ডঃ রোহিত রুংতা, কনসালটেন্ট নেফ্রোলজিস্ট এবং রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট ফিজিশিয়ান, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল। এনারা বিভিন্ন বিভ্রান্তি দূর করেন, দরকারি তথ্য জানান এবং নেফ্রোলজিকাল ইস্যুর দিকগুলো তুলে ধরেন। এই অনুষ্ঠানে ১৫ জন মানুষের জীবনের কাহিনী তুলে ধরা হয় যারা কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হওয়ার পর স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।
এই অনুষ্ঠানে যেই আলোচনা হয়, যা মানুষকে ক্লিনিক্যাল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অবহিত করেন, যেখানে কিডনির সমস্যার উপসর্গ থেকে পুরোদস্তুর ভালো থাকার দিকটি ছিল।
নিজের জীবনের গল্প বলতে গিয়ে ৫৭ বছর বয়সী শিক্ষাজগতের সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত বসিরহাটের ছবি সাহা জানান,” শিক্ষা ক্ষেত্রে আমার জীবন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস শিখিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা। দুটো কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হওয়ার পর আমি আরো লড়াকু হই আর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের তাৎপর্য উপলব্ধি করি। ১৯৯৬ সালে ডঃ দিলীপ কুমার পাহাড়ির তত্বাবধানে আমার প্রথম কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হয়। আমি ওনার প্রথম দিকের ট্রান্সপ্লান্ট হওয়ার ক্ষেত্রে রোগী ছিলাম। ২০১৪ সালে মেডিকায় আমার দ্বিতীয় কিডনির ট্রান্সপ্লান্ট হয়। আমি ডঃ পাহাড়ি এবং তার টিমের কাছে খুব কৃতজ্ঞ এবং বিশেষ করে মেডিকা পরিবারের কাছে, তাদের অবদানের জন্য, বিশেষ করে যেভাবে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। নিয়মিত চেক আপের মধ্যে থেকে আর সংযত জীবনযাপন করে আজ আমি ভালো আছি আর জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছি। এখন আমি সত্যি খুব ভালো আছি ।
আরেকজন যিনি পেয়েছেন, প্রবাল কুমার। ৬৪ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি অফিসার, বর্তমানে নিউটাউন বাসী জানান,” ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আমার কিডনি ফেলার দিকটি নজরে আসে। ডঃ পাহাড়ির তত্বাবধানে আমার একটি সফল ট্রান্সপ্লান্ট অস্ত্রোপচার হয়। বর্তমানে আমি চার মাস অন্তর চেক আপ করাই। এখন আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করি। আমি যখন কিডনি ফেলার বিষয়টি জেনেছিলাম, তখন মনে হয়েছিল যে পৃথিবী শেষ হয়ে গেল আমার। যেভাবে ডঃ পাহাড়ি এবং তার টিম আমার কাউন্সেলিং করেন, তাতে আমি আমার ভয় জয় করি এবং চ্যালেঞ্জকে সামনের লড়াই করার সাহস আনি নিজের মধ্যে। এর ফলে আমি ট্রান্সপ্লান্ট পদ্ধতির মধ্যে এগিয়ে যেতে পারি এবং এখনও পর্যন্ত আমি স্বাভাবিক জীবন পালন করে চলেছি ।
লেক গার্ডেন নিবাসী ৭৪ বছর বয়সী সরলা লাখটিয়া নিজের জীবন নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন,” ২০০৭ সালে, আমার কিডনি ফেল করার বিষয়টি ধরা পড়ে। এই দুঃখের খবরটি জেনে আমি ডঃ পাহাড়ির মতামত নিই। উনি আমায় জানান যে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করার সুযোগ রয়েছে। সেই হলে আমি সুস্থ হয়ে যাব এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারব। আমার সেই বছরই কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হয়। সেই সময় থেকেই আমি চার মাস অন্তর অন্তর ডঃ পাহাড়ির তত্বাবধানে চেক আপে রয়েছি। আমি এবং আমার পরিবার ওনার কাছে খুবই কৃতজ্ঞ আমাকে নতুন জীবন দেওয়ার জন্য। কিডনি বিকল হওয়ার মত মারাত্মক সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওনার সাহায্য কখনো ভুলে যাওয়ার নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *